ঠাট্টা করছেন, তাই না ফাইনম্যান? - ০২

পৃষ্ঠা - ০২

আমার একটা ফোর্ড কয়েল (গাড়ীর ইঞ্জিনের স্পার্ক কয়েল) ছিল আর স্পার্ক টারমিনালটা ছিল সুইচবোর্ডের উপর। আর রেইথিওন কোম্পানীর একটা আর, এইচ, টিউব ছিল যার মধ্যে ছিল আরগন গ্যাস। স্পার্ক টারমিনালে টিউবটা লাগালেই এর মধ্যে রক্তবর্ণের দ্যুতি খেলা করত। অসাধারণ একটা ব্যাপার।

একদিন আমি ফোর্ড কয়েলটা নিয়ে খেলছিলাম – স্পার্ক দিয়ে কাগজ ফুটো করছিলাম – এমন সময় কাগজে আগুন ধরে গেল। একটু পরই আমার হাতে ছ্যাঁকা লাগতে শুরু করলে আমি কাগজটাকে একটা ধাতব ময়লা ফেলার ঝুড়িতে ফেলে দিলাম। ওই ঝুড়িতে অনেকগুলি খবরের কাগজ ছিল। আর যায় কোথায়! খবরের কাগজ তাড়াতাড়ি পুড়ে বলে ঘরের মধ্যে বেশ বড় একটা অগ্নিকুন্ড তৈরি হল। আমার মা বসার ঘরে তাঁর বান্ধবীদের সাথে বসে তাস খেলছিলেন। আমি তাড়াতাড়ি দরজাটা বন্ধ করে দিলাম যেন তিনি আগুন দেখতে না পান। পাশে একটা সাময়িকী পড়ে ছিল। সেটা তুলে আমি ঝুড়িতে ফেললাম যেন আগুন কমে আসে।

আগুন নিভে যাওয়ার পর আমি সাময়িকীটা সরিয়ে ফেললাম, কিন্তু তাতে ঘরটা ধোঁয়ায় ভর্তি হয়ে গেল। ঝুড়িটা তখনও অনেক গরম ছিল। তাই ধোঁয়ার হাত থেকে বাঁচতে একজোড়া প্লায়ার দিয়ে ঝুড়িটাকে বয়ে নিয়ে জানালায় ধরে রাখলাম।

কিন্তু বাইরে বেশ বাতাস ছিল আর তাতেই হল সর্বনাশ। আবার আগুন জ্বলে উঠল। এবার কিন্তু সাময়িকী আমার হাতের নাগালের বাইরে। সাময়িকটা নেওয়ার জন্য আমি আগুনসহ ঝুড়িটা আবার জানালা থেকে ভিতরে আনলাম। লক্ষ্য করলাম জানালায় পর্দা ঝুলছে! সর্বনাশ!!

যাইহোক, শেষপর্যন্ত সাময়িকীটা এনে আগুন নিভিয়ে ফেলতে পারলাম। এবার সাময়িকীটা হাতে রেখেই ঝুড়িটা ঝাঁকিয়ে জ্বলন্ত ছাই জানালা দিয়ে ২/৩ তলা নিচের রাস্তায় ফেলে দিলাম। এরপর বাইরে এসে দরজা বন্ধ করে মাকে বললাম, “মা, বাইরে খেলতে যাচ্ছি”। জানালা দিয়ে আস্তে আস্তে ধোঁয়া বেরিয়ে গেল।

আমি মোটর দিয়েও বেশ কয়েকটা জিনিস বানিয়েছিলাম। আরেকবার আমার কেনা ফটোসেলের জন্য একটা এম্প্লিফায়ার বানিয়েছিলাম। এটা দিয়ে আমি একটা বৈদ্যুতিক ঘন্টা নিয়ন্ত্রণ করতে পারতাম। ফটোসেল এর উপর হাত নিয়ে গেল ঘন্টাটা বেজে উঠত। আমি খুব বেশি ‘গবেষনার’ সুযোগ পেতাম না। মা আমাকে জোর করে খেলতে পাঠিয়ে দিত। কিন্তু বাসায় থাকলে আমি পরীক্ষাগারে নানান খুটখাট করতাম।

Comments